জেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুর: পুরোপুরি পরিপক্ক হয়নি লিচু। এরই মধ্যে বাজার দখল করতে শুরু করেছে। এসব লিচু স্বাদে টক, আকারে মাঝারি, ভেতরের আটিও বড়, তবে দাম বেশি।
সপ্তাহ দেড়েক ধরেই মেহেরপুরের বাজারে দেখা মিলছে লিচুর। অনেকে বেশি লাভের আশায় আগেভাগেই বাজারে নিয়ে আসছেন অপরিপক্ক এ লিচু। মৌসুমের ফল হিসেবে ক্রেতাদের কাছে এ লিচুর চাহিদা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেরপুরের তিনটি উপজেলায় অবস্থিত বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন সড়কের দুই পাশের ফলের দোকানগুলোতে লিচুর পসরা সাজিয়ে বসে আছেন মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরা। চটের বস্তায় সাজিয়ে রেখেছেন লিচু। সবুজ পাতার নিচে মোড়ানো কাঁচা-পাকা সবুজ-লাল আভার লিচু।
৪০ পিস লিচু একসঙ্গে বেঁধে বানানো হয়েছে একটি করে থোকা। স্থানীয় বাজারে তা ‘হাফ পোন’ হিসেবে পরিচিত।
দুটি থোকাকে ধরা হয় এক পোন হিসেবে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আর্কষণের জন্যই লিচুর এ পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা।
লিচু বাজারে প্রকারভেদে লিচুর দাম এবার একটু চড়া। প্রতি ১০০ লিচুর দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত, প্রতি পিস হিসেবে যার দাম আসছে দুই টাকা পঞ্চাশ পয়সা থেকে তিন টাকা পর্যন্ত।
এ বছর লিচুর দাম একটু বেশি হলেও মৌসুমি ফল হিসেবে ক্রেতারা এ লিচু কিনছেন বেশি দামে।
ক্রেতা সেলিম রেজা বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটিতে মুজিব নগরে ঘুরতে যাওয়ার সময় সড়কের দুপাশে থাকা গাছে থোকায় থোকায় লিচু ঝুলতে দেখে আমার মেয়ে লিচু খাওয়ার বায়না করেছিল। তাই বাজারে লিচু উঠতে দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না।
‘এক পন লিচু কিনলাম ১৯০ টাকায়। আরও বেশি নেয়ার ইচ্ছে ছিল তবে একটি লিচু মুখে দিয়ে দেখলাম, টক। আবার তুলনামূলক আঠির আকার বড়। রয়েছে পোকার আক্রমণও। মেয়ের আবদার রাখতেই লিচু কেনা।’
ফলব্যবসায়ী আবুল হাশেম বলেন, ‘আমরা ফলব্যবসায়ী যখন যে ফল বাজারে ওঠে তাই বিক্রি করি। এখন বাজারে তরমুজ আর আনারস ছাড়া তেমন কোনো দেশি ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময়ে আটি লিচু বাজারে উঠায় টক হলেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক শষ্য কৃষিবিদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভৌগলিক কারণে মেহেরপুরের লিচু অন্য জেলার চেয়ে একটু আগেই বাজারজাত হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ার কারণে প্রতি বছরই লিচুর চাষ বাড়ছে।
জেলায় এ বছর প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। বতর্মান বাজারে যে লিচু পাওয়া যাচ্ছে তার অধিকাংশই আটি জাতের লিচু। বাজারে চাষিরা দামও পাচ্ছেন ভালো।’